বিং এডাল্ট!

জানিস, বড় হয়ে উঠার সবচেয়ে বড় সমস্যাটা কোথায়? বিশেষ করে সমস্যাটা হয় আমাদের চিন্তাধারার মাঝে। তাছাড়া কখন কোন কথাটা বলা উচিত আর কখন বলা অনুচিত সেটাই একটা ঝামেলার গণ্ডীতে গিয়ে পড়ে!

হঠাৎ করে পুরো জগতটাই যেন কেমন করে বদলে যেতে থাকে। লজ্জার চেয়ে বরং সমাজের নানাবিধ নিয়ম-কানুনকে ভেঙ্গে ফেলে উড়ে বেড়াতে ইচ্ছে করে। খোলা আকাশের স্বাধীন পাখির মত!

জটিল গোলকধাঁধার চেয়ে বরং জীবনটাকে একটা সাদাসিধে গণ্ডিতে নিয়ে আসার চেষ্টা চলে।
এডাল্ট হয়েছিস বললে লজ্জা কাজ করে না। কাজ করে দায়িত্ববোধের!

এডাল্ট জোকসের চেয়ে রাজনৈতিক ক্রিয়া-প্রক্রিয়ার কর্মকান্ডে বেশি হাসি পেতে থাকে। কেমন করে যেন কথা বলাটাও কমতে থাকে। সেখানে জায়গা করে নেয় একটা নির্লিপ্ত মানুষ, যে সব বুঝেও অবুঝের মত থাকার অভিনয় করে।

সন্ধ্যায় বাবার সাথে হওয়া আড্ডার বিষয়বস্তু যায় বদলে। আমার বদলের কথায় বাবা যখন বলে এমনটা সবার সাথেই ঘটে, উনিও সেই পর্যায় পাড় করেই আসছেন, তখনও কেন জানি না নিজের ভেতরটা ফাঁকা ফাঁকা লাগতে থাকে। এডাল্ট হওয়ার কারণে বাবার সাথে এতকাল না বলতে পারা অনেক কথাও আজকাল বলা হয়। বাবা বন্ধুর মত বলেই হয়তো এটা পারা যায়।

আর মাকে আরো কাছ থেকে বুঝতে পারি। এত আদর দিয়ে বড় করে তোলার পরও উনার মাঝে বাইরের জগতকে বুঝার সচেতনতার অভাব নেই। সংসারের চাবি আর পারিপাশের নানা দিক কেমন করে যেন এই বোকা বোকা দেখতে মহিলাটা অনেক সুন্দর করে চালিয়ে নিচ্ছেন! মায়ের কাছে শুয়ে থাকা যায় না আর। তার গায়ের মা মা গন্ধটাও আর পাওয়া হয়ে উঠে না। খাবারটা নিজে দেয়ার জন্য কত আকুতি করেন উনি। কিন্তু তাকে রেস্ট নিতে বলে নিজের খাবার নিজেই নিয়ে খাওয়ার মাঝে কাজ করে এডাল্ট হওয়ার একটা দায়িত্ববোধ।

জানিস, এত এত সুন্দর মুখ আর আমাকে আকর্ষণ করে না। কাছে টেনে নেয় পাশে বসে থাকা বন্ধুরা। তাদের কথার মাঝে ঝসলে উঠে একটা গন্ধ। বিপ্লবের গন্ধ। তারপর একটা সময় পর সেই গন্ধও যায় বদলে। কে নিজের প্রাণ দিয়ে বিপ্লব ঘটাবে? তারচেয়ে চায়ের কাপের সাথে এলিক্সের গাওয়া প্যাপার লাভের গান চলতে থাকে। বিং এডাল্ট, আমরা বুঝতে শিখে যায় যে, পুঁজিবাদের এই সমাজে নিজেকে দৌড়াতে হবে। যে প্রথম স্থানে আসবে, সেই জয়ী। এখানে ২য় কিংবা ৩য় বলে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই!

জানিস তো, প্যাপার লাভের গানটা নেশা ধরায়। একটা শিস বাজিয়ে তাই সেই গানই গেয়ে যাই। জীবনটা একটা সাদা কাগজ। তাতে লিখে যা তুর গল্প। আমি নাহয় গানই গেয়ে গেলুম।


Post a Comment

Post a Comment (0)

Previous Post Next Post